ব্রহ্মসূত্র বা বেদান্ত দর্শন (বিদ্যোদয় ভাষ্য) - পণ্ডিত উদয়বীর শাস্ত্রী

Arsh Library: বেদান্ত দর্শনের হিন্দি ভাষ্যসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা, উপনিষদের মর্ম ও ব্রহ্মজ্ঞান সম্পর্কিত চিন্তাধারা সহজ ভাষায় জানতে পড়ুন।

বেদান্ত দর্শন - বিদ্যোদয় ভাষ্য

পণ্ডিত উদয়বীর শাস্ত্রী

ভূমিকাঃ বেদ, উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র ও গীতা ভারতীয় দর্শনের মূল ভিত্তি। আচার্য ব্যাসদেব রচিত ব্রহ্মসূত্রে উপনিষদের আধ্যাত্মতত্ত্বকে সুসংহতভাবে প্রতিপাদন করা হয়েছে। কালের ধারায় বিভিন্ন আচার্য ভিন্ন ভিন্ন ভাষ্য দিয়ে নিজস্ব দর্শন প্রতিষ্ঠা করেছেন—অদ্বৈত, দ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত প্রভৃতি তারই ফল। উপস্থাপিত আলোচনায় এই মতভেদ সত্ত্বেও জীব, ব্রহ্ম ও প্রকৃতির স্বতন্ত্র সত্তা, শঙ্করাচার্যের অদ্বৈতবাদ, এবং উদয়বীর শাস্ত্রীর যুক্তিনিষ্ঠ বিশ্লেষণের আলোকে বেদান্ত দর্শনের দ্বৈতবাদী দিক স্পষ্ট করা হয়েছে।

person ভাষ্যকার পরিচিতি

এ দর্শন শাস্ত্রের অভূতপূর্ব বিদ্বান পণ্ডিত উদয়বীর শাস্ত্রী ১৮৯৫ সালের ৬ জানুয়ারী, রবিবার বুলন্দশহর জেলার বনৈল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রারম্ভিক শিক্ষা সংগ্রামের সময় শুরু হয়। তারপর ৯ বছর বয়সে ১৯০৪ সালের জুলাই মাসে তাকে সিকান্দারবাদ গুরুকুলে ভর্তি করানো হয়। পুনরায় উচ্চ শিক্ষার জন্য ১৯১০ সালে তিনি জ্বালাপুর মহাবিদ্যালয় গুরুকুলে ভর্তি হন। পুনরায় তিনি কোলকাতা থেকে (১৯১৫/১৯১৬) সালে ন্যায়তীর্থ তথা সাংখ্য-যোগতীর্থ পরীক্ষা উত্তীর্ণ হন। পুনরায় তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাস্ত্রী, বানারস থেকে বেদান্তাচার্য, গুরুকুল বিশ্বদ্যিালয় থেকে বিদ্যাভাস্কর আদি পরীক্ষাতেও সফলভাবে উত্তীর্ণ হন। তাকে জ্বালাপুর বিশ্বদ্যিালয় গুরুকুল থেকে বিদ্যাবাচস্পতি উপাধী প্রদান করা হয়। জগন্নাথপুরীর ভূতপূর্ব শঙ্করাচার্য শ্রী ভারতী কৃষ্ণতীর্থ মহাশয় তার অপার পাণ্ডিত্য দেখে তাকে বেদরত্ন তথা শাস্ত্র শেবধি উপাধীতে ভূষিত করেন।

auto_stories বই পরিচিতি

ব্রহ্মসূত্র: বেদান্ত দর্শনের মূলভিত্তি

এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ঋগ্বেদাদিতে যেখানে-সেখানে ছড়িয়ে থাকা আধ্যাত্ম-তত্ত্বকেই বিভিন্ন ঋষিরা উপনিষদ আকারে সংকলন করেছিলেন। উপনিষদে প্রতিপাদিত আধ্যাত্মকে লক্ষ্য করে বেদব্যাস বাদরায়ণ একমাত্র অখণ্ড ব্রহ্মের নির্দোষ নিষ্কলঙ্ক স্বরূপকে প্রমাণিত করার জন্য ব্রহ্মসূত্র গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এই গ্রন্থই বর্তমানে বেদান্ত দর্শন নামে পরিচিত। এতে প্রতিটি দিক থেকে ব্রহ্মের অস্তিত্ব প্রমাণ করে তার প্রকৃত স্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে।

বেদ, উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র ও গীতার সামঞ্জস্য

অনেক আচার্যের মতে, মহাভারতের অন্তর্গত শ্রীকৃষ্ণ-অর্জুনের সংলাপের আকারে প্রাসঙ্গিকভাবে আঠারো অধ্যায়ে যা কিছু বলা হয়েছে, তা-ও উপনিষদের সারসংকলন। যিনি বেদব্যাস ব্রহ্মসূত্র রচনা করেছেন, তিনিই গীতার বক্তা। তাই বেদ, উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র ও গীতায় প্রতিপাদিত বিষয়ের মধ্যে পারস্পরিক সামঞ্জস্য থাকা উচিত। অন্য কথায়, যখন ব্রহ্মসূত্র ও গীতার মূলভিত্তি উপনিষদ এবং উপনিষদের মূলভিত্তি বেদ, তখন ব্রহ্মসূত্রে যা কিছু বলা হয়েছে, তা বেদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত, অসঙ্গতিপূর্ণ নয়।

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ব্যাখ্যার পার্থক্য

কিন্তু ব্যাখ্যাকাররা ব্রহ্মসূত্রের যে বৃত্তি, বার্তিক, ভাষ্য বা টীকা লিখেছেন, তাতে তারা নিজস্ব মত বা কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের বিকশিত মত সংযোজন করেছেন। কে না জানে যে, একই ব্রহ্মসূত্রের আচার্য শঙ্কর, রামানুজ, মধ্ব ও বল্লভাচার্য প্রমুখ দ্বারা পরস্পর ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যা সবাই ব্রহ্মসূত্রের মত প্রকাশ করে না, বরং ব্যাখ্যাকারদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিকেই প্রকাশ করে। এই ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যার কারণে অদ্বৈত, শুদ্ধাদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, দ্বৈতাদ্বৈত, দ্বৈত প্রভৃতি নানা সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা ঘটেছে।

শঙ্করাচার্যের ভাষ্য ও অদ্বৈত বেদান্ত

আচার্য শঙ্কর ও রামানুজের ভাষ্য থেকে জানা যায় যে, তাদের আগেও ব্রহ্মসূত্রের অনেক ভাষ্যকার ছিলেন। কিন্তু প্রাপ্ত ভাষ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন আচার্য শঙ্করের। তাই তিনি সবচেয়ে প্রাচীন ভাষ্যকার হিসেবে গণ্য হন। যে পরিস্থিতিতে তাঁর আবির্ভাব ঘটেছিল, তার কারণে তাঁকে একটি বিশেষ সম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হয়েছিল। সাধারণ অবস্থায় তাঁর ভাষ্যের সেই রূপ হতো না, যা আজ আমাদের সামনে রয়েছে। কারণ যাই থাকুক, আজ বিশ্বে ভারতীয় দর্শন অদ্বৈত বেদান্ত নামে পরিচিত। এবং অদ্বৈত বেদান্তকে শাংকর বেদান্ত রূপে স্বীকৃত করা হয়।

জীব, ব্রহ্ম ও প্রকৃতির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব

আমাদের মতে, ব্রহ্মসূত্রে কমপক্ষে সত্তরটি সূত্র আছে, যাতে জীব, ব্রহ্ম ও প্রকৃতি—এই তিন অনাদি তত্ত্বের স্বতন্ত্র রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রকৃতি জগতের উপাদানকারণ, জীবাত্মার স্বতন্ত্র সত্তা আছে এবং সে জগতে স্বাধীনভাবে কার্য করে সর্বজ্ঞ, সর্বান্তর্যামী ও সর্বশক্তিমান ব্রহ্ম-পরমাত্মার ব্যবস্থা অনুযায়ী নিজ কৃতকর্মের ফল ভোগ করে। এভাবে এই তিন তত্ত্বই অনাদি, নিজ নিজ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নিয়ে পরস্পর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শঙ্কর নিজেই তাঁর ভাষ্যে কমপক্ষে ১৮ স্থানে এটা স্বীকার করেছেন।

উদয়বীর শাস্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি

দর্শনশাস্ত্রের মর্মজ্ঞ পণ্ডিত সাহিত্যবাচস্পতি আচার্য উদয়বীর শাস্ত্রী তাঁর স্বকীয় শৈলীতে এই মতই উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু মধ্যযুগীয় আচার্যদের মতো তিনি নিজের মত সূত্রগুলোর উপর জোর করে চাপিয়ে দেননি, বরং সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে স্বাভাবিকভাবে তা নিষ্ক্রান্ত হয়েছে—এটা দেখানোর চেষ্টা করেছেন।

বেদান্ত দর্শন: দ্বৈতবাদের প্রমাণ

এই ভাষ্য অধ্যয়ন করলে বেদান্তদর্শনই শুধু নয়, প্রাসঙ্গিকভাবে সব দর্শন, উপনিষদ ও গীতা প্রভৃতি আর্ষ গ্রন্থে পরস্পর সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বেদান্তদর্শন স্পষ্টত দ্বৈতবাদী দর্শন হিসেবে প্রমাণিত হয়।

info বইয়ের বিস্তারিত তথ্য
edit
লেখক:মহর্ষি বেদব্যাস
book
প্রকাশনী:বিজয়কুমার গোবিন্দরাম হাসানন্দ
calendar_month
প্রকাশকাল:২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ
wysiwyg
পৃষ্ঠা সংখ্যা:৮৩৫
translate
ভাষা:হিন্দি
description
ফরম্যাট:PDF
save
ফাইল সাইজ:৪৩.৯ MB

downloadডাউনলোড করুন

আপনার পছন্দের ফরম্যাটে বইটি ডাউনলোড করতে নিচের বাটনে ক্লিক করুন:

(ডাউনলোড লিঙ্ক কাজ না করলে বা কোনো সমস্যা হলে অনুগ্রহ করে মন্তব্য করুন।)